বেশরম

ক্ষোভ (জানুয়ারী ২০১৪)

আদিব নাবিল
  • ৭০
রাজা হাঁটিয়া যায়। সুবেশী পোশাক পতপত করিয়া বাতাসে ওড়ে। দমকা হাওয়ায় এলোমেলো নড়ে, বস্ত্রকোণা বাতাসে ডানা ঝাপটায়। চেতনা সমুজ্জ্বল প্রজাসকল, শ্রদ্ধাব্যাকুল পারিষদ স্তুতি করে, তালি দেয় সপাটে- ‘‘কী সাধু কী সাধু….রাজা মোদের- গর্বে আসীন আছেন, থাকুন চিরদিন! তখত তাঁহার হউক আপন তালুক।’’
পাগলেও অগ্নি বোঝে, প্রমাদ আছে অধুনা অন্তঃকরণ অবাধ প্রকাশে। চেতনাপ্রতিবন্ধি অবুঝ শিশু, যেমনটা ঘটাইয়াছিল ইতিহাসে, তেমনটা উচ্চকিত হয় না এইবার। অস্ফূটে বলে- ‘‘একি…এ তো দেখি এইবারও দ্বিগম্বর!’’
গর্জনে জনরব শোনে না যে কালা, সেও টের পায় ওষ্ঠলিপি! জানে না, তাহার বিবেকই বোধ করি সাড়া দেয় অন্তরে। ফোটে না যদিও তাহা আপন কর্মে। পুরণো পোশাক ছাড়িয়া করে নবায়ন, ধরে নবতন্তুতে বোনা অতি মিহি আচ্ছাদন- রাজার আদলে।
‘‘-অতি উত্তম….উচিত…বিধেয়…হয় এই নয়াসাজ।’’ কদমে রাজার রক্ষেণ আপন স্বীকৃতি।
‘‘বিলক্ষণ বিলক্ষণ, যাহা ভূষণ তাঁহার তনুতে তাহাই উচিত কাজ। যাহা ঘটে তাহাঁর দ্বারা, তাহাই উচিত বটে, যাহা রটে তাঁহার বয়ানে, তাহাই মহাসত্য’’- বলিয়া চেঁচায়, আাঁকিয়া বেড়ায় শব্দ-দৃশ্য পটে।
‘‘ধন্য ধন্য’’ বলিয়া, দেন মহারাজা তাহাদের জ্ঞানের স্বীকৃতি। জ্ঞানজীবিরা হন আস্বস্ত তাহাদের ভবিতব্য নিশ্চিতে।
বৈয়াকরণ আকসার ভাঙে ব্যাকরণ। চলিতে থাকে মুণ্ডচর্চা না থাকুক সেথা কেশ। বিনা জলে চলে তরণি বিনা হাওয়ায় ফুলে পাল। না থাকুক তার তানপুরাতে, তবু থাকে ছন্দ লয় তাল!...বিষ্ঠায় সুগন্ধ খুঁজে পান যিনি তিনি হন আচার্যে আসীন।

অভাজনে…..কহতব্য নহে এমন গালি আসিলেও মুখে নিভৃতে গিলিয়া ফেলেন। চক্ষু আড়াল করিয়া চলেন, ভাবনা চাপিয়া রহেন- কুলাঙ্গার সকল।
নেংটা আধা-নেংটা সুট-কোটধারীরা ল্যাংগটে নয়া ফ্যাশন খুঁজিয়া লন। নিজেরা নিজেদের পিঠ চাপড়ান- ব্যাক্কল জনসকল দিব্যি মানিয়াছে পোষ আবার! তৃপ্ত মনে লক্ষ্য করে- আর কোন রাও-শব্দ নাই, নিকটে ঘটিবে তাহারও নাই সংকেত।
হালুয়া-রুটিতে পিছাইয়া পড়া কতিপয়। ফিরিয়া আসেন বেশরম দাঁত কেলাইয়া- ‘‘আহা হা…আহা হা…কী কীর্তি মোদের মহরাজার, কত উত্তম তাঁহার বিচার, কী অভিনব তাঁহার বেশ, …নবউদ্যমে আসিতেছে ঢেউ, ফুলিয়া উঠিছে দেশ!’’
হায়রে অভাগা জাতি! নিজে ত্যাগিতে পারে নাই বস্ত্র, তবু মানিতে হয় বস্ত্রহীন শীর্ষকূলের লোলুপ আদর।
পারে নাই দিতে উঁহাদের বস্ত্রহীনতার আপাতঃ উচিত শিক্ষা। তবে-
পারিয়াছে যাহা অতীতে, প্রতীতি আছে, করিবে আবার পারিবে সর্বকালে।

অদৃশ্য কাপড়ে ঘিরিয়া দিল, করিয়া দিল আড়াল। ধ্বজাধারীরা। টেরও পাইলো না, কতদূরে চলিয়া গেল তাহারা। রাজা আর প্রজার প্রকট আড়াল অস্পৃশ্য অদৃশ্য রহিল শুধূ….
‘‘হইল না মোক্ষমে সুমতি, তাই লিখিত হইলো আঁস্তাকূড়ের গতি!
…. বাগানো অস্ত্র, সামনে নিরস্ত্র সর্বহারা
ঘুরিয়া যায় নল অগোচরে, আপন শস্ত্রে বিদীর্ণ সঙ্গীনধারী
কাঁপিছে জল্লাদ নিজে- আজ আসামীর হাতে যূপকাঠি!’’
...সতত বিস্মৃত হয় অত্যাচারী- জনতায় নীরবতা কথা বলে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মহিউদ্দীন সান্‌তু অসাধারন একটি লেখা, ভালো লাগার সবটুকু ঢেলে দিয়েছেন। অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৪ জানুয়ারী, ২০১৪
এফ, আই , জুয়েল # অসাধারন ভাবনার দানুন একটি গল্প । = লেখককে ধন্যবাদ ।।
ভালো লাগেনি ১৪ জানুয়ারী, ২০১৪
ঐশিকা বসু খুব সুন্দর লিখেছেন।
ভালো লাগেনি ১৩ জানুয়ারী, ২০১৪
সূর্য প্রায়শই রাজকার্য আড়ালেই থেকে যায়। প্রজারা ভেবেই পায় না কেন এমন হলো। খোলা চোখে আমরা ভাড়ামো দেখি আর ভাবি রাজ কার্য বুঝার সাধ্য বোধ হয় কখনোই হবে না। আর শেষেরটুকুতো কবিতাই। ফিরে আসাটা অসাধারণ উপহার দিয়েই শুরু করেছেন। সমসাময়িক অনেক ঘটনা আর বঞ্চনার দারুন চিত্রায়ন
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০১৪
জনতায় নীরবতা কথা বলে। .....অনেক ধন্যবাদ সূর্য আপনাকে।
ভালো লাগেনি ৯ জানুয়ারী, ২০১৪
রনীল লেখকরা মাঝে মাঝে ভবিষ্যৎবক্তার মত কাজ করে ফেলেন। অনেকটা এমনই এক চিত্রনাট্য কিছুদিন আগেই মঞ্চায়িত হয়ে গেছে, তবে আমি নিশ্চিত সেটি এ গল্প লেখার পরেই হয়েছে। এটি অবশ্য নতুন কিছু নয়। এমন নাটক আমরা এর আগে অনেকবারই দেখেছি। প্রেক্ষাপট একই, শুধু অভিনেতারা বদল হন। নতুন রাজার অভিপ্রায় অনুযায়ী ব্যাকরণ সংশোধন করেন বাকিরা। শেষের পাঁচটি লাইন একাধিকবার পড়েও ঠিক নিশ্চিত হতে পারলামনা। কিছুটা অতৃপ্তি রয়েই গেল...
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০১৪
অনেকগুলো এলোমেলো ভাবনা, যদিও প্রেক্ষাপট কিংবা প্রসঙ্গ একই। মনের ভাবনায় সূতোটি গাঁথাই ছিল, প্রকাশে অনেক ছেদ আছে। ইচ্ছাকৃত ধরতে পারেন, উন্নাসিকতা বলে অপবাদ দিতে পারেন। শেষ পাঁচ লাইন কেন, অনেক জায়গাতেই অস্পষ্টতার দায় লেখকের। আপনার স্বীকারোক্তিটি ভাল লাগলো।....একটি বিপ্লবের জয়ের সাথে শেষ কটি লাইন মিলিয়ে ভাবুন তো! সেই বিপ্লবের স্বপ্নটি কি আমরা দেখছি না?
ভালো লাগেনি ৯ জানুয়ারী, ২০১৪
Rumana Sobhan Porag খুবই সুন্দর লিখেছেন , অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো .
অনেক ধন্যবাদ রুমানা।
ভালো লাগেনি ৯ জানুয়ারী, ২০১৪
মোঃ আক্তারুজ্জামান পাঠক হামেশাই লেখককে কাঠগড়ায় দাঁড় করাইয়া রাখে। ওষ্ঠাগত প্রাণ হাতে লইয়া আলোচনায় সমালোচনার তীরে জর্জরিত হইতে হইতেই লেখক নিজের শক্তি পরীক্ষা দিয়া থাকে। রম্যের নামে পাঠককে শক্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ করিয়া যে লেখক আড়ালে বসিয়া মিটিমিটি করিয়া হাসে তিনি নিঃসন্দেহে করিৎকর্মা, সার্থক!
ভালো লাগেনি ৫ জানুয়ারী, ২০১৪
লেখক যখন আড়ালে তখন বোদ্বা ব্যতিত সাধারণ পাঠক কূল বুঝতে পারে ১৯৯০ সালে এই লেখকের জন্ম মোটেও হয় নাই। .....২৩ বছরের সাধানায় এইসকল লাইন আসবেনা.... আমিও লেখকের আড়াল চরিত অদৃশ্য পর্দা সরিয়ে দেখে নিলাম।
ভালো লাগেনি ৬ জানুয়ারী, ২০১৪
বিদগ্ধ পাঠক আপনারা। দুজনেরই লেখার বিশেষ ভক্ত আমি। নিজের লেখায় আপনাদের মন্তব্যের জন্যও প্রতীক্ষায় থাকি।.....কৃতার্থ হয়েছি আপনাদের উপস্থিতিতে। কিঞ্চিত হতাশও বটে লেখা নিয়ে কোন মন্তব্য না থাকায়। সৃষ্টির সাফল্য ব্যর্থতাতেই স্রষ্টার সুখ-দুঃখ।....মূল্যায়ন পেলাম কি?
মোজাম্মেল কবির যাহা ভূষণ তাঁহার তনুতে তাহাই উচিত কাজ। যাহা ঘটে তাহাঁর দ্বারা, তাহাই উচিত বটে, যাহা রটে তাঁহার বয়ানে, তাহাই মহাসত্য’’ বিষ্ঠায় সুগন্ধ খুঁজে পান যিনি তিনি হন আচার্যে আসীন......... সময়ের উপযুক্ত জবাব। চমৎকার!!! বুঝিয়াও নিরব থাকিয়া আমাদের শক্তি যে দিনে দিনে লোপ পায়...
ভালো লাগেনি ৩ জানুয়ারী, ২০১৪
অনেক ধন্যবাদ, মোজাম্মেল কবির।
সুমন দারুন কাব্যিক রম্য। আগেতো রাজা দীগম্বর এ কথা প্রজা বলিত না। এখন সবাই বলে সবাই বোঝে, বোঝে বধিরও অথচ রাজারাই বোঝে না। অনেক দিন পর পেলাম আপনাকে। শুভেচ্ছা ফিরে আসার
ভালো লাগেনি ১ জানুয়ারী, ২০১৪
একরাশ কৃতজ্ঞতা।

০২ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪